রুপন দত্ত – আনোয়ারা, চট্টগ্রাম-
আগামী ২৯ মে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের এবারের নির্বাচন যেন ভিন্ন মাত্রা পেল। এবার সাধারণ ভোটারদের মূল্যায়ন হচ্ছে বেশী। এবার ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন সব প্রার্থী।
আনোয়ারায় এবারের পরিস্থিতি কিছুটা অন্যরকম। উপজেলার রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের তিন মেরুকরণে গুরুত্ব বেড়েছে ভোটার ও নেতাকর্মীদের।
তিন প্রার্থীর মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরী, সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক দুই সপ্তাহ ধরে প্রচারণায় সরব আছেন। এখানে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সমর্থন পাচ্ছেন চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরী আর ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুগ্রীব মজুমদার দোলন। এটা নিয়ে প্রকাশ্যে দুই ভাগ হয়ে গেছে উপজেলা আওয়ামিলীগ। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরীর সাথেও আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী।
আর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক পাচ্ছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াশিকা আয়শা খান অনুসারীদের সমর্থন। এছাড়া স্থানীয় রাজনীতিতে দীর্ঘদিন উপেক্ষিত পদবঞ্চিত তৃণমূলের ত্যাগী নেতারা সাবেক সভাপতি মোজাম্মেল হকের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তারা মোজাম্মেলকে জয়ী করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও অর্থ প্রতিমন্ত্রীর অনুসারীদের পাল্টাপাল্টিতে বেড়েছে নির্বাচনী উত্তাপ। ভোটাররাও অনুভব করছেন নির্বাচনী আমেজ।
বর্তমান চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী বলেন, গত দুই মেয়াদে আমি উপজেলার ১১ ইউনিয়নে রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন করেছি। নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত রেখেছি। দায়িত্ব পালনকালে মানুষের সাথে মিলেমিশে ছিলাম। কারো প্রতি অন্যায় অবিচার করিনি। সাধারণ মানুষ এটাতেই সন্তুষ্ট। মাদক নির্মূল, এলাকার উন্নয়ন, আনোয়ারা হাসপাতালের মানোন্নয়ন, পল্লী বিদ্যুতের ভোগান্তি, সন্ত্রাস রোধসহ অনেক কাজ করেছি।এবার আবারো নির্বাচিত হলে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবো।
আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক বলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরীর ব্যক্তিগত ক্লিন ইমেজ ও সাধারণ মানুষের প্রতি ভাল ব্যবহারের বিষয়টি সাধারণ ভোটারদের মাঝে এবার বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপির সমর্থন নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন।তিনি বলেন, এলাকার সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অধিকার ফিরিয়ে দিতেই আমার নির্বাচনে অংশ নেয়া। মানুষ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার নিশ্চয়তা চাইছে। সেই দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। কেন্দ্র দখল, ব্যালট
ছিনতাই, জনগণকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলার দিন শেষ। ব্যালটের মাধ্যমে জনগণ দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে জবাব দেবে। পরিকল্পিত উন্নয়ন, লুটপাট বন্ধ, টেকসই
বেড়িবাঁধ, পারকিতে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র, হাসপাতাল ও চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন, কর্মসংস্থান, স্কুল–কলেজে আধুনিক শিক্ষা ও মেধাচর্চা এসবই তার প্রচারণায় প্রাধান্য পাচ্ছে।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করছেন অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরী। মোবাইলে তার সাথে অনেকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জসীমউদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে চেয়ারম্যান পদে আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম.এ.মান্নান চৌধুরী আর ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুগ্রীব মজুমদার দোলনকে দলের সমর্থন দেয়া হয়েছে। আর সাবেক ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপিও পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন। জনগণ তাদের সাথে আছেন,আগামী ২৯ তারিখ তারা বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে তিনি আশা করেন।
কিন্তু সাধারণ ভোটাররা বলছে ভিন্ন কথা।তারা বলছে, এবার আমরা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবো। প্রার্থীদের অতীত বিবেচনা করে আমরা ভোট দিব।
Discussion about this post