অধিকার ডেক্স :চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ করানোর পর কাজের বিল নিয়ে নয়-ছয় করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবু নাসের ও পিআইও অফিসের প্রকৌশলী সায়েমের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)র কাছে কোন প্রতিকার না পেয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মোঃ মানিক নামের ভুক্তভোগী এক কন্ট্রাক্টর।
অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, টেন্ডারবিহীন উপজেলার প্রকল্প কর্মকর্তা চলতি বছরে আনোয়ারায় অবস্থিত হাজীগাঁও আশ্রয়কেন্দ্রের প্লাসিডিং ওয়াল নির্মাণ ও বস্তা দিয়ে মাটি ভরাটের কাজ করার কন্ট্রাক্ট দেন ভুক্তভোগী কন্ট্রাক্টর মোঃ মানিককে। কাজ দেওয়ার সময় বর্তমান সরকারি কাজের দাম অনুযায়ে বিল দেওয়ার কথা ধার্য হয়। কাজের ধরণ অনুযায়ী প্লাসিডিং ওয়াল নির্মাণের পর সরকারি মূল্য অনুযায়ী কাজের বিল আসে ১৭লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। তবে কন্ট্রাক্টারকে দিতে প্রকল্প কর্মকর্তা দিতে চাই ১১লাখ ৮৮হাজার টাকা। এছাড়াও ১৫শ ফুট জায়গার মধ্যে ৬শ ফুট ৬হাজার বস্তা বালু সিমেন্ট দিয়ে বস্তা ভরাটের কাজের মূল্য বস্তা প্রতি আসে ১৩০ টাকা। তারা দিতে চাই ৮০টাকা করে। ভুক্তভোগী কন্ট্রাক্টর এই বিলে অসন্তোষ প্রকাশ করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ভুক্তভোগী কন্ট্রাক্টরকে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দেয়। প্রকল্পের পুরো কাজ তদারকি করেন প্রকল্প অফিসের পকৌশলী সায়েম।
অভিযোগপত্রে উল্লেখিত বিষয়গুলো অনুসন্ধান করলে বেরিয়ে আসে -প্লাসিডিং ওয়াল নির্মাণে ও মাটি ভরাট কাজে হয়েছে ব্যাপক অনিয়ম। যা ইতিমধ্যে ওয়াল ভেঙে যাচ্ছে অন্য দিকে বস্তা গুলো থেকে মাটি সরে বড় বড় গর্ত হয়েছে। জানা যায়, ১৫শ ফুটের মধ্যে ৮০০ফুট বস্তা দিয়ে মাটি ভরাটের কাজ করে ২০২২ অর্থ বছরে পিআইও নিজেই। যার মধ্যে বস্তায় বালু ও সিমেন্টের কথা থাকলেও ২৫টাকা দরে করা হয়েছে। যার মধ্যে লুটপাট হয়েছে ৮থেকে লাখ টাকা। এর মধ্যে প্লাসিডিং ওয়াল নির্মাণ পাথর দিয়ে নির্মাণ করার কথা থাকলেও সেখানে সাড়ে ৭০০ফুট নির্মাণ করা হয়েছে কংক্রিট দিয়ে। সেখানেও হয়েছে বড় ধরণের অনিয়ম।
সরেজমিন আশ্রয়ণ পকল্পের ঘর ঘুরে দেখা যায়,
প্রকল্পের পূর্ব দিকে সিমেন্ট ও বালু দিয়ে ভরাট করা বস্তা ঠিক থাকলেও প্রকল্পের প্লাসিডিং ওয়াল নির্মাণ ও ঘরের পশ্চিম ও উত্তরে বালু ও সিমেন্ট দিয়ে যে বস্তা দেওয়ার কথা সেখানে ভরাট করা মাটি দিয়ে। যা এর মধ্যে ভেঙে পড়ছে। ৮শ ফুট জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এছাড়াও ওই অংশে কংক্রিট দিয়ে নির্মাণ করা ওয়াল যে কোন সময় ভেঙে নীচের ঘর গুলোও ভেঙে যেতে পারে।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী কন্ট্রাক্টর মোঃ মানিক বলেন, প্রকল্প কর্মকর্তা টেন্ডারবিহীন আমাকে কাজটা দিয়েছে এটা সবাই জানে। ১৫শ ফুট কাজের মধ্যে আমি ৭শ ফুট বালি ও সিমেন্ট দিয়ে বস্তা ভরাটের কাজ করেছি। বাকি ৮শ ফুট এর আগে পিআইও কর্তৃক অন্য কন্ট্রাকটর দিয়ে বালি-সিমেন্টের পরিবর্তে মাটি দিয়ে করানো হয়েছিলো যার মধ্যে এখন বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ওয়াল নির্মাণের সময় টাকা না দিয়ে কাজের জন্য ৩৬ হাজার ইট কিনে দেয়। সোখানে আমি ইট পেয়েছি ২৮ হাজার। পুরো প্লাসিডিং ওয়াল ওনার কথায় ১৫শ ফুট নির্মাণ করেছি। যার মধ্যে ৮শ ফুট নির্মাণ করেছি কংক্রিট দিয়ে বাকী ৬শ ফুট নির্মাণ করেছি পাথর দিয়ে। এসব কাজ শেষ হলে কাজ করার পর আমি যখন বিল চাইতে যায় তখন প্রকল্প কর্মকর্তা আমাকে বিভিন্ন হুমকি দেয় এবং উপজেলায় আসতে বারন করে দেয়। বিষয়টি আমি ইউএনও মহোদয়কে জানালে তিনিও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
Discussion about this post