সিনিয়র রিপোর্টার- মোঃ আব্দুর রাজ্জাক :
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জের সেতাবগঞ্জ (রেল কলোনি) এলাকার এক পরিবারের মা মেয়ে সহ চারজন নারী ও কিশোরী বিগত তিন মাস যাবত নিখোঁজ রয়েছে, উদ্ধার নাই।
বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের সভাপতি অ্যাড রবীন্দ্র ঘোষ জানান, অভিযোগ সুত্রে জানা যায় উক্ত এলাকার মৃত প্রদীপ কুমার দাসের পুত্র বিনয় কুমার দাস (৫৪) উপজেলার দেওগাঁও বকুলতলা ডিগ্রী কলেজে ক্রীড়া শিক্ষক হিসেবে চাকুরিরত, তাঁর পরিবারে এক স্ত্রী, তিন কন্যা, কিন্তু বড় পরিতাপের বিষয় স্ত্রী ও তিন কন্যা বিগত তিন মাস ধরে নিখোঁজ, ঘটনাটি পর্যায়ক্রমে সুকৌশলে ঘটানো হয়েছে বলে জানা যায়।
প্রথমে ঘটনা বিনয়ের স্ত্রী শিবানী রানী দাস (৫০) ও বড় মেয়ে জয়ীতা সরকার ঝর্ণা (১৮) গত (১৫ মার্চ ২০২৩) বিকাল অনুমান ০৩.৩০ মিনিট সময়ে কলেজ থেকে বিনয় দাস বাড়ীতে ফিরে দেখেন তাঁর স্ত্রী ও বড় মেয়ে বাড়ীতে নাই, তখন সে তাঁর জমজ ছোট দুই কন্যা প্রিয়াংকা সরকার শিলা (১৪) ও মনিকা সরকার উর্মিলা (১৪)কে তাহাদের মা ও বোন কোথায় গেছে জিজ্ঞাসা করিলে জমজ মেয়েরা জানায় তাহারা এক সাথে দুপুরে ঘুমাইয়া পরে ফলে তাহারা কিছুই জানেন না। এরপর বিনয় তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে তাঁর বড় মেয়ের ফোনে ফোন করলে তাঁর স্ত্রী ফোনটি রিসিভ করে বলেন যে, তাহারা মা-মেয়ে দিনাজপুর শহরে তাহার বোনের বাড়ীতে বেড়াইতে গেছে এবং আরও বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে বেড়াতে যাবে, বাড়ী ফিরতে বেশ কিছুদিন দেরী হবে, বিনয় তখন তাঁর স্ত্রীর কথার উপর ভরসা করে নিরব থাকে।
দ্বিতীয় ঘটনা এক মাস পর গত (১৫ এপ্রিল ২০২৩) সকাল অনুমান ০৭.০০ মিনিট সময়ে বিনয় বোচাগঞ্জ রেল স্টেশন সংলগ্ন আশা হোটেলে নাস্তা খাওয়ার সময় তাঁর জমজ কন্যাদের নাস্তা খাওয়ানোর জন্য তাঁর ছোট মেয়ে প্রিয়াংকা সরকার কে ফোন করলে সে বলে মা আমাদের দুই বোনকে দিনাজপুরে চিকিৎসা করাবেন বলে ফোন করে আমাদেরকে বাসস্ট্যান্ডে ডেকে নিয়ে গাড়ীতে তুলে দিনাজপুরে দিকে নিয়ে যাচ্ছে, আমরা এখন রাস্তায়, আমাদের সাথে আরও লোকজন আছে, তাঁরা মা-কে কথা বলতে নিষেধ করছে এই বলে ফোন কেটে দেয়।
এরপর থেকে বিনয় দাস তাঁদেরকে আর ফোনে পায় না, ফোনে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় ও আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁদের সন্ধান পায়নি।
ভুক্তভোগী বিনয় কুমার দাসের জমজ দুই কন্যা সেতাবগঞ্জ সরকারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতেন, ৯ম শ্রেণীর নিয়মিত ছাত্রী ছিলেন।
পরবর্তীতে গত (২৪ এপ্রিল ২০২৩) বোচাগঞ্জ থানায় অভিযোগ করিতে যান ভুক্তভোগী। থানা পুলিশ একটি দরখাস্ত লিখিয়া উহাতে ভুক্তভোগী বিনয়ের স্বাক্ষর নিয়া ১০৯৩ নং জিডি রেকর্ড করেন। জিডি রেকর্ড করার পরেও পুলিশের সহযোগিতা পায়নি , পুলিশের সহযোগিতা না পেয়ে ভুক্তভোগী নিজেই বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেও এযাবত পর্যন্ত তাঁর স্ত্রী কন্যাদের সাথে কোনরূপ যোগাযোগ বা সন্ধান করতে না পেরে, গত (২৯ জুন ২০২৩) বিনয় দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি অপহরণ মামলার এজাহার দায়ের করেন এবং জেলা পুলিশ সুপারসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন যে থানায় জিডি করার পর, দুই মাস গত হয়ে যায় কিন্তু থানা পুলিশ এখন পর্যন্ত ভিক্টিমদের উদ্ধার বা কোনো সন্ধান করতে পারেনি এবং এজাহার দায়ের করার পরেও মামলা রেকর্ড না করে গড়িমসি করছে থানা পুলিশ।
মামলা রেকর্ড করা সহ আইনিভাবে সহযোগিতা চেয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী বিনয় দাস।
বি ডি এম ডাব্লুর, সভাপতি অ্যাড রবীন্দ্র ঘোষের নিকট ভুক্তভোগী বিনয় দাস আবেদন করে বলেন যে আমার স্ত্রী ও তিন কন্যাকে সুকৌশলে কে বা কাহারা অসৎ উদ্দেশ্যে অপহরণ করেছে, বিগত তিন মাস পার হয়ে গেছে আজও পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর পাইনি, থানা পুলিশও আমাকে সহযোগিতা করছে না আমি এখন নিরুপায় দিশেহারা আমাকে সহযোগিতা করুন।
বি ডি এম ডাব্লুর সভাপতি এই খবর পেয়ে বোচাগঞ্জ থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) কে মোবাইল ফোনের মাধমে অপহৃত ৪ জন কে উদ্ধার এবং আদালতে হাজির করার অনুরোধ করলে। তিনি ভিক্টিমদের উদ্ধার করে আদালতে হাজির করার চেষ্টা করবেন বলে বি ডি এম ডাব্লুকে অবগত করেন।
বি ডি এম ডাব্লুর সভাপতি এহেন অপহরণ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং দ্রুত ভিক্টিমদের উদ্ধার করা সহ অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানা পুলিশ ও কোনো সন্ধান করতে পারেনি বা ভিক্টিমদের উদ্ধার করতে পারেনি বলে জানা
Discussion about this post