আনোয়ারা প্রতিনিধি :পিতা শব্দের ভার কতটা তা বোধহয় পিতা না হওয়া পর্যন্ত অনুভব করা যায় না। ছোটবেলায় পিতা হারানোর পর অনেকেই বলেন, পিতা থাকতে, পিতার মর্ম বোঝে না কেউ। ছোটবেলার মানুষের মুখে শোনা এই কথাগুলো বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন আরো ভাবাতে শুরু করে।
সমাজ যাকে পিতা বলতে শেখালো সে আসলে কে? একজন পুরুষ! মায়ের স্বামী! এই চিরাচরিত পরিচয় ছাড়া যে বিষয়টি বৈজ্ঞানিক তা হলো, সৃষ্টির দুই সৃষ্টিকণার একটি অবশ্যই পিতার অংশ। পিতা হইতেই সৃষ্টি। অবশ্যই মায়ের গর্ভে। আর সৃষ্টিকর্তাই যদি আবার আরও একবার জীবন ফিরিয়ে দেয়! তাহলে তিনি নিশ্চয়ই শুধু পিতা শব্দে আবদ্ধ থাকতে পারেন না।
ঘটনা বলার আগে পিতার দায়িত্ববোধের কথা বোঝাতেই সূচনায় এত কথা লেখা। নিজের ১৭ বছরের ছেলে জীবন বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি ছেলেকে দিলেন বাবা। কেবল খবর হিসেবে দেখলে এই ঘটনার সামাজিক ও মানবিক দায়িত্ববোধকে ছোট করা হবে।
সন্তানের প্রতি স্বার্থহীন ভালোবাসা দেখানো এই বাবার নাম জবুর আহমদ সওদাগর (৬০)।ছেলে মোহাম্মদ লিয়াকত আলী আত্তারী (১৭) বাঁচাতে তিনি তার একটি কিডনি দিয়েছেন। মোহাম্মদ লিয়াকত আলী আত্তারী বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়ন পশ্চিম বৈরাগ এলাকায়। জবুর আহমদ-ইয়াছমিন দম্পতির ছেলে লিয়াকত আলী বাকলিয়া সরকারি কলেজে শিক্ষার্থী।
গত ১ বছর আগে কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। তারপর একটানা ১২ মাস ডায়ালেসিসের মধ্যে থাকেন মোহাম্মদ লিয়াকত আলী । এরপর শরীর আরো অবনতি হতে থাকে মোহাম্মদ লিয়াকত আলী । কোনো উপায় না পেয়ে কিডনি প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। ঢাকা সিকেডি এন্ড ইউরোলজি হাসপাতাল ৬০ বছর বয়সী বাবা জবুর আহমদ, তার ১৭ বছরের সন্তান মোহাম্মদ লিয়াকত আলী আত্তারী কিডনি দান করেন।পাশাপাশি বিছানায় শুয়ে পিতার কিডনি প্রতিস্থাপিত হলো ছেলের শরীরে।
Discussion about this post