আনোয়ারা প্রতিনিধি
খুলে দেওয়া হয়েছে টানেলের উভয় চ্যানেল
প্রধানমন্ত্রীর মেগা প্রকল্পের অন্যতম প্রকল্প কর্ণফুলী তলদেশ ফুঁড়ে এর মধ্যেই আলোর মুখ দেখেছে স্বপ্নের সুড়ঙ্গপথ বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেল। এর মধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে টানেলের উভয় চ্যানেল। সড়ক প্রস্তুতের কাজ শেষ পর্যায়ে। সড়কের কাজ সম্পূর্ণ হলে শুরু হয়ে যাবে যানবাহন চলাচল। টানেলের কাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে। ফলে সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ দ্রুততার সঙ্গে শেষ করতে তাগিদ অনুভব করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ)। নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা প্রান্তে প্রস্তুত হচ্ছে ৪০৭ কোটি টাকায় সাড়ে দশ কিলোমিটার টানেল সংযোগ সড়ক। টানেলের আগেই ছয় লেনের এ সড়কের কাজ সম্পন্ন করতে চায় সওজ। সড়কটি দৈর্ঘ্যে খুব বেশি না হলেও এটিই হবে বিশাল এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক নেটওয়ার্ক। যা বাস্তবায়নের পর পাল্টে যাবে দক্ষিণ চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
এদিকে টানেলের সংযোগ সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করতে কর্ণফুলীর শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে আনোয়ারা কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার ছয় লাইন সড়কের কাজও চলছে দ্রুত গতিতে। সড়কের দুইপাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বালি ভরাটের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়েও কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। এদিকে ছয় লাইনের জন্য ক্রসিং হতে আসা ও বাঁশখালী সড়কের সঙ্গে সমন্বয় করতে মধ্যখানে সড়কের জায়গা কম থাকায় নতুন করে ৭ দশমিক ৮৩ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে শাহমীরপুর মৌজা থেকে ১ দশমিক ৩৭ একর, দৌলতপুর মৌজা থেকে ৪০টি দাগের ১ দশমিক ৩৭ একর, বড়উঠান মৌজা থেকে ৪০টি দাগের ২ দশমিক ৪০ একর, চাতরী মৌজা থেকে ৩৯টি দাগের ২ দশমিক ১৭ একর এবং বেলচূড়া মোজা থেকে ৭টি দাগের শূন্য দশমিক ৫২ একরসহ ভূমির তপসিল অধিগ্রহণ করতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। টানেলের সঙ্গে সড়ক নির্মাণের কাজও শেষ হবে বলে জানিয়েছে সওজ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে আনোয়ারা সদর এবং সেখান থেকে কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত সড়কের মোট দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে এগারো কিলোমিটার। বিদ্যমান সড়ক সম্প্রসারিত হয়ে তা রূপ নিচ্ছে টানেল সংযোগ সড়কে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বার খুলে দেয়ার যে পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবে স্বল্প দৈর্ঘ্যরে এই সড়কটি। কারণ, এর মাধ্যমেই সংযুক্ত হতে যাচ্ছে টানেল হয়ে একদিকে চট্টগ্রাম মহানগর এবং আরেকদিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক।
বঙ্গবন্ধু টানেল সংযোগ সড়কটি প্রস্থে হবে ১৬৫ ফুট। এ টানেল চালু হলে তার মধ্যদিয়ে প্রথম বছরেই অন্তত ৬৩ লাখ যানবাহন চলাচল করবে যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। আর সকল যানবাহন যাবে দক্ষিণ প্রান্তের এই সংযোগ সড়ক দিয়ে।
সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, শিকলবাহা থেকে আনোয়ারা সদর ও কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে আমরা এবছর জুলাই মাসের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারব। এ সড়কটি হবে ছয় লেনের, যার মধ্যে চারলেন হবে দ্রুতগতির গাড়ি চলাচলের জন্য। আর বাকি দুইলেন হবে ধীরগতির যানবাহনের জন্য। সংযোগ সড়কের জন্য টানেল নির্মাণ এবং উদ্বোধনের কাজ যাতে বিলম্বিত না হয়, সে জন্য সড়ক বিভাগ পুরোপুরি সচেতন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
Discussion about this post