চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বটতলী ইউনিয়নের বৈরাইয়া গ্রামে রাতের আঁধারে ফসলি জমি থেকে হিড়িক পড়েছে মাটি কাটার। কৃষকের তিন ফসলি এসব জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক মাটিখেকোর বিরুদ্ধে। আর এই মাটি কেখোর নেপথ্যে রয়েছে অবৈধ ইট ভাটা মোহছেন আউলিয়া ব্রিকসের মালিক শামসু।
স্থানীয়রা জানায়, গভীর রাতে প্রশাসনকে ঘুমের মধ্যে রেখে বটতলী ও সরেঙ্গা গ্রাম থেকে স্কেভেটর দিয়ে মাটি খনন করে মাটিভর্তি ট্রাকগুলি যায় মোহছেন আউলিয়া ব্রিকসে। প্রতি রাতে কম হলেও স্কেবেটর দিয়ে মাটি কেটে ৪০টি পিকআপ এই মাটি টানার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের আইনকে অমান্য করে ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ফসলি জমির মাটি কেটে ইট ভাটায় আনা হচ্ছে এসব মাটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাটি কাটার ফলে কোথাও কোথাও ফসলি জমির মাটি কেটে পুকুর সমান গভীর করা হচ্ছে। ফলে বিলীন হচ্ছে তিন ফসলি জমি। রাত হলেই মাটি বহন করার কাজে ব্যবহৃত হয় মোহছেন আউলিয়া ব্রিকসে ২০/২৫ টি ট্রাক। জমির মাটি আনার নেয়ার কাজে ব্যবহৃত এসব ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হচ্ছে ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সদ্য সংষ্কার হওয়া সড়কসহ বিভিন্ন রাস্তাঘাট। জলাঞ্জলি যাচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পও। ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে সরকারের।
স্থানীয় ককৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে যে সমস্ত জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে তার পাশের জমিগুলোতেও কয়েক বছর ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে না । এমতবস্থায় ব্রিক্স শামসুর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে স্থানীয় কৃষকরা।
জানা যায়, সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রবিহীন ৪নং বটতলী ইউনিয়নের হলদিয়া পাড়া এলাকায় শামসু নামে স্থানীয় একজন তিন ফসলি জমিতে গড়ে তুলেছে অবৈধ এই ইটভটা। আর অবৈধ এই ইটভাটার মাটির যোগান দিতে আশপাশের জমি থেকে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে উর্বর মাটি।
২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে অবৈধ এই ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা করেন চট্টগ্রাম জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া ইয়াছমিন। এসময় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ঠিক করে দেওয়ার জন্য তিন মাসের সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
মাটি কাটা ও ইট ভাটার বৈধতার বিষয়ে জানতে চাইলে মোহছেন আউলিয়া ব্রিকসের মালিক শামসুর বলেন, ব্রিকস বৈধ কি অবৈধ পরিবেশ অধিদফতরে গিয়ে খবর নেন আমি বলতে পারব না। মাটি না কাটলে ইট কিভাবে বানাবো বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
ইট ভাটাটির বৈধতা দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মুফিদুল আলম বলেন বিষয়টা আসলে আমার জানা নাই। আপনি জেলার পরিচালক ফেরদৌস মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, ইটভাটা অবৈধের বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতর দেখবে। আর মাটি খাটার বিষয়ে খবর নিয়ে আমরা আইনগত ব্যাবস্থা নিব।
Discussion about this post