ঢাকার ধামরাইয়ে দিনে দুপুরে বটিদা দিয়ে জবাই করে নিজের স্ত্রী এক সন্তানের জননীকে হত্যা করেছে ঘাতক স্বামী।
জনতা ওই ঘাতক স্বামীকে আটক করে থানা পুলিশকে খবর দেয়া দিয়েছেন। ওই ঘাতকের নাম তামিম ইকবাল(২৩)। সে উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের উত্তর হাতকোড়া গ্রামের মোঃ আব্দুল বারেকের ছেলে ও আন্তঃজেলা ছিনতাইদলের সর্দার। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডজনখানেক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়ে শত শত নারী পুরুষ ওই বাড়ীতে এসে ভীড় জমায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়,কয়েক বছর আগে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলা সদরের মোঃ হাইজুল ইসলামের বড় মেয়ে হাজেরা আক্তারের(৩০) বিয়ে হয় ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের চারিপাড়া আদর্শ গ্রামের মোঃ আব্দুল কুদ্দসের সঙ্গে। এরই সূত্রধরে বছর খানেক আগে একই এলাকার উত্তর হাতকোড়া গ্রামের তামিম ইকবালের সঙ্গে কাবিন রেজিষ্ট্রির মাধ্যমে বিয়ে হয় হাইজুল ইসলামের ছোট মেয়ে ফাতেমা আক্তারের(২০)। বিয়ের পর তাদের দম্পত্যজীবনে রয়েছে ৬মাসের এক পুত্র সন্তান। বিধিবাম এরপর ওই গৃহবধূ জানতে পারে তার স্বামী ছিনতাইদলের লিডার। এনিয়ে তাদের মধ্যে মনমালিন্যের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ওই গৃহবধূ স্বামীর ঘরসংসার করবেনা বলে চলে যেতে চায়।
স্থানীয় শাহিন আলম মেম্বার বিষয়টি সমঝোতা করে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে তাকে যেতে বাঁধা দেন। পরে এনিয়ে তিনি সালিশি বৈঠকও করেন।
এরপরও তামিম ইকবাল ছিনতাই করা বন্ধ না করায় ফের এনিয়ে তাদের মধ্যে সোমবার দুপুর অনুমান আড়াইটার দিকে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে তামিম ইকবাল ঘরে থাকা বটিদাা দিয়ে স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করে। এরপর সে পালানার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন। এরপর বিষয়টি ধামরাই থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়।
এব্যাপারে স্বামীর হাতে খুন হওয়া ফাতেমা আক্তারের বড়বোন হাজেরা আক্তার(৩০)জানান,আমার ছোট বোনের সঙ্গে তার স্বামীর মনমালিন্য হওয়ায় তাদের দুইজনকে নিয়ে কিছুদিন আগে আমার বাবার বাড়ী বেড়াতে যাই। তামিম আর ছিনতাই করবেনা বলে আমার বোনকে প্রতিশ্রুতি দেয়। হঠাৎ শুনি আমার বোনকে তার স্বামী সোমবার দিনেদুপরে জবাই করে হত্যা করেছে। আমি ঘাতকের ফাঁসি চাই।
এবিষয়ে ইউপি সদস্য শাহিন আলম বলেন,সংসারটি টিকিয়ে রাখতে স্থানীয়ভাবে সালিশি বৈঠকে বসে তাদের মধ্যে সমঝোতা করি। সোমবার দুপুরে শুনি ওই গৃহবধূকে বটিদা দিয়ে জবাই করে হত্যা করেছে তার স্বামী তামিম ইকবাল। জনতা তাকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলে।
এব্যপারে ধামরাই থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আরাফাত উদ্দিন বলেন,স্বামীর হাতে গৃহবধূ খুন হওয়ার খবর পেয়েছি। খুনিকে এলাকাবাসী আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখেছেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে খুন হওয়া গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার ও আটক খুনিকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসি। এরপর মরদেহের ছুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়না তদন্তের জন্য রাজধানীর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হবে। এরপর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে মামলা রুজুসহ যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মঙ্গলবার সকালে খুনিকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।
Discussion about this post