ঢাকার ধামরাইয়ের বালিয়া ইউনিয়নপরিষদ নির্বাচনে পক্ষে না থাকায় রাজপথে তিন যুবককে লোহার শিঁকলে বেঁধে রেখে হাত-পা গুঁড়িয়ে ফেলে হত্যা চেষ্টা ও তাদের বহণকৃত মোটরসাইকেলও ভাংচুর করেছেন নবনির্বাচিত বালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মজিবর রহমান সহ কর্মীরা। তিনি দম্ভোক্তি করে বলেন,ওসি,এসপি, ডিসি আমার কিছুই করতে পারবেনা। ওই চেয়ারম্যান শান্তিবাহিনীর পশ্চিম সূত্রাপুর শাখার সভাপতি আব্দুল মজিদ,সদস্য শামসুল আলম গেদু ও বিজিবি সদস্য সুজনের নেতৃত্বে এ সন্ত্রাসী তান্ডব চালানো হয় বলে নিশ্চিতকরেছেন স্থানীয় লোকজন।মাইকে প্রচার করে ওই চেয়ারম্যানের লোকজন রণপ্রস্তুতির ঘোষনা দেয়। এতে পরিস্তিতি চরম উত্তপ্ত হয়ে উঠে।শান্তিবাহিনীর সভাপতি,নারী ও নবনির্বাচিত ওই চেয়ারম্যানসহ ১১জনকে আটক করেছে ধামরাই থানা পুলিশ। ওই তিন যুবককে উদ্ধারের পর সাটুরিয়া সরকারী আবাসিক হাসপাতালে নেয়া হলে অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। খবর পেয়ে ওই তিন যুবকের প্রাণ বাঁচাতে এলাকাবাসী পদক্ষেপ নিলে এঘটনায় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়ে যায়। দফায় দফায় চলে ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এতে কমপক্ষে আহত হয় অর্ধশতাধিক। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ৫গাড়ী পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে এলাকায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান,ধামরাই থানার পুলিশি সূত্র। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম সূত্রাপুর চৌরাস্তা বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায়।
এলাকাবসী জানান,উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের দূনিগ্রাম এলাকার মোঃ ইসরাফিল হোসেন,মোঃ শাকিল আহাম্মেদ ও মোঃ সজিব হোসেন ১১নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে বালিয়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান বিজয়ী চেয়ারম্যান মোঃ মজিবর রহমানের বিপক্ষে অবস্থান নেন। এ থেকে ওই চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাদের শত্রুতা সৃষ্টি হয়। নির্বাচনে বিজয়ের পর ওই চেয়ারম্যান ও শান্তি বাহিনীর সভাপতি আব্দুল মজিদ,শামসুল আলম গেদু ও বিজিবি সদস্য মোঃ সুজনসহ শান্তি বাহিনীর অপরাপর সদস্যরা ওই তিন যুবককে বিভিন্ন স্থানে খুজেঁ বেড়ান শায়েস্তা করার জন্য।
সোমবার বিকাল ৫টার দিকে ওই তিন যুবক একটি মোটরসাইকেল যোগে যাওয়ার সময় ওই ইউপি চেয়ারম্যান শান্তি বাহিনীর সভাপতি সদস্যদের নিয়ে ঢাকা-কালামপুর-কাওয়ালীপাড়া-মির্জাপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম সূত্রাপুর চৌরাস্তা বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গতিরোধ করে। এরপর তাদেরকে লোহার শিঁকলে বেঁধে রেখে লোহার রড,বাশের লাঠি ও হকিস্টিক দিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে। একপর্যায়ে তাদের হাত-পা গুড়িয়ে ফেলে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলও ভাংচুর করা হয়।
ঘটনাটি এলাকাবাসী জানতে পেরে তারা দ্রুত লাঠিসোটাসহ ওই তিন যুবকের প্রাণ বাঁচাতে এগিয়ে আসলে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বাধীন শান্তি বাহিনীর সদস্যরাও চড়াও হয়। এতে বিবদমান দু’গ্রুপের লোকজনের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ও দাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ফলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে আহত হয় কমপক্ষে অর্ধশতাধিক। খবর পেয়ে সাভার-ধামরাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল্লাহীল কাফী,ধামরাই থানার ওসি তদন্ত পুলিশ পরিদর্শক মোঃ ওয়াহিদ পারভেজ ও কাওয়ারীপাড়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের অফিসার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মোঃ রাসেল মোল্লাসহ ৫গাড়ী পুলিশ মোতায়েন হয় ঘটনাস্থলে। এরপর তারা গ্রেফাতর অভিযান চালিয়ে শান্তি বাহিনীর পশ্চিম সূত্রাপুর শাখার সভাপতি মোঃ আব্দুল মজিদ, নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মজিবর রহমান,মোঃ আব্দুর রহমান, সদস্য মোঃ শামসুল আলম গেদু,মোঃ শিহাব আহাম্মেদ,মোঃ শামসুল হক,নজুমুদ্দিন ,রাজন আহাম্মেদ,মজিবর আলী,পাপিয়া আক্তার ও রাশিদা বেগম ১১জনকে আটক করে।
এব্যাপারে ধামরাই থানার ওসি তদন্ত পুলিশ পরিদর্শক মোঃ ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। একজন জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে এমন কর্মকান্ড কাম্য নয়। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সাভার ধামরাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহীল কাফির নেতৃত্বে ৫গাড়ী পুলিশ নিয়ে ঘটন্থলে ছুটে যায়। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।চেয়ারম্যানের পক্ষের লোকজন মাইকে প্রচার করে সন্ত্রাসী তান্ডব চালাতে বললে তাদেরকে আটক করি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যসহ ১১জনকে আটক করা হয়েছে। এব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
অধি/ সাই
Discussion about this post